Tuesday, April 29, 2014

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে নারী


একটি দেশ ও জাতির সামনে এগিয়ে যেয়ে পুরুষের ভুমিকা যেমন অগ্রনী তেমনি নারীর ভূমিকাও কোন অংশে কম নয়।
সে কারণেই আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন- “ বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যানকর; অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী অর্ধেক নর।“
 কিন্তু অর্থই যেখানে অনর্থের মুল বা
অর্থই যেখানে দ্বিতীয় ঈশ্বর, আর অর্থের ক্ষমতা না থাকার কারণেই নারী প্রতিনিয়ত নিগৃহিত হচ্ছে তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে, কাছের, পাশের মানুষদের থেকে । এহেন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বনের কথা নারীর ভাবনাতে আসাই উচিত। অথনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হলে পরেই অন্যের প্রতি নারীর নির্ভরশীলতা কমে যাবে। আর যখন পুরুষের প্রতি নারীর এই অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা কমে যাবে তখন নারী নিগৃহিত হবে তুলনামুলকভাবে কম।

অনেক নারীই শিক্ষার অভাবেই হোক, সংসারের কাজের চাপেই হোক বা নিজের ছোট ছোট বাচ্চার কারণেই হোক দীর্ঘ সময় বাইরে থেকে কাজ করতে পারে না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই তাকে অর্থনৈতিকভাবে তার নিকতাত্মীয় পুরুষের উপর নির্ভর করতে হয়।

 অনেক নারী উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সময় অনেক স্বপ্নের বীজ বুনলেও পরবর্তীতে বাস্তবতা তার অনুকুলে না থাকায় সে হয়ে পরে হতাশাগ্রস্থ।
এরকম পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসাবে নারী নিজের মুক্তির পথ দেখতে পারে।

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সাধারণত নিজেদের উদ্যোগেই কাজ শুরু করে থাকে। যেমন, কাঁথা সেলাই, কাপড় সেলাই বা টেইলারিং, শাড়ীতে সুতার কাজ সহ অন্যান্য ডিজাইনের কাজ, পার্লারের কাজ (এটিতে বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে।), হোম মেকার, অর্ডারে কাপড় বা তৈরী পোশাক সাপ্লাই, মাশরুমের চাষ সহ হাঁস-মুরগী গরু-ছাগল পালন, যা আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে পারে একটু পৃষ্ঠপোষকতা পেলে। ব্যাংকের কাছে ঋণের দ্বারস্থ হয়ে তারা তাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে না। আর ঋণ পাওয়াও সহজ নয়। এই উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন মূলধন। কিন্তু এ ধরনের কোনো নীতি নেই সরকারের।


একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হয়ঃ

 ১. ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সাধারণত অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য কম থাকায় তাদের ঋণের প্রয়োজন পরে কিন্তু তারা ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ পায় না।

 ২. একজন উদ্যোক্তা কিভাবে তার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সেই ব্যাপারে সে অনেক সময়ই পুরোপুরি স্বচ্ছ ধারণা রাখে না।।

 ৩. একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার প্রস্তুতকৃত পণ্য আকর্ষণীয় প্রচারের অভাবে পসার জমাতে অনেক সময়ই ব্যর্থ হয়।

 ৪. প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাব থেকে যায় সাধারণত।

 ৫. বাজার ব্যবস্থাপনায় একটি ণ্য প্রস্তুত করার পর তা ক্রেতা বা ভোক্তার কাছ পর্যন্ত পৌছাতে যে পরিমাণ পরিকল্পনা বা দূরদর্শিতা থাকা দরকার তা না থাকায় অনেক সময়ই একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা যথাযথ প্রচারের অভাবে ব্যবস্যায় ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।

 ৬. সাংগঠনিক দক্ষতা না থাকায় তা যর্থার্থভাবে পরিচালিত তে পারে না।

 ৭. অনেক সময়ই একজন উদ্যোক্তা অল্প শিক্ষিত বা নিরক্ষরও হতে পারে । এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের থাযথ অভাব থাকতে পারে।

 ৮. শিক্ষিত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও যথেষ্ট সাপোর্টের অভাবে এক সময় তার কাজ থেকে সে পিছিয়ে আসে।

 পরিশেষে বলবো নারীকে নিজের শারীরিক শক্তিতে, নিজের মানসিক জোরে এগিয়ে যেতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। তবেই সম্ভব অন্যের কাধেঁর বোঝা অপবাদ থেকে মুক্তি পেতে।

কিছু ছবি:






----------------------------
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন

No comments:

Post a Comment

নির্বাচিত পোস্ট

'অবদমিত অভিমান'- ২০১৭ এর বইমেলায় প্রকাশিতব্য সময় প্রকাশন এর গল্প সংকলনের বই

প্রথম গল্প লিখেছিলাম আজ থেকে ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে।