Friday, December 15, 2017

প্রিয় আবৃত্তিকার মোঃ সোহরাব হোসাইনের যতো আবৃত্তি

আবৃত্তিকারের সাথে কখনো ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলাম।
সেদিন ফোনের কণ্ঠ শুনেই নিশ্চিত হয়েছিলাম তিনি আবৃত্তি করেন।
আমার ধারণা মিথ্যে হয়নি।
অসম্ভব সুন্দর যার কথা বলার ধরণ তিনিই তো আবৃত্তি করে শ্রোতার কানে সুধা ঢালবেন।

১. শেষের কবিতা
      - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও।
             তারি রথ নিত্যই উধাও
         জাগাইছে অন্তরীক্ষে হৃদয়স্পন্দন,
      চক্রে-পিষ্ট আঁধারের বক্ষফাটা তারার ক্রন্দন।
                 ওগো বন্ধু,
             সেই ধাবমান কাল
      জড়ায়ে ধরিল মোরে ফেরি তার জাল--
             তুলে নিল দ্রুতরথে
      দুঃসাহসী ভ্রমণের পথে
         তোমা হতে বহু দূরে।
             মনে হয়, অজস্র মৃত্যুরে
         পার হয়ে আসিলাম
      আজি নবপ্রভাতের শিখরচূড়ায়--
         রথের চঞ্চল বেগ হাওয়ায় উড়ায়
             আমার পুরানো নাম।
         ফিরিবার পথ নাহি;
             দূর হতে যদি দেখ চাহি
                 পারিবে না চিনিতে আমায়।
                         হে বন্ধু, বিদায়।

      কোনোদিন কর্মহীন পূর্ণ অবকাশে
             বসন্তবাতাসে
      অতীতের তীর হতে যে রাত্রে বহিবে দীর্ঘশ্বাস,
             ঝরা বকুলের কান্না ব্যথিবে আকাশ,
      সেই ক্ষণে খুঁজে দেখো--কিছু মোর পিছে রহিল সে
             তোমার প্রাণের প্রান্তে; বিস্মৃতিপ্রদোষে
                 হয়তো দিবে সে জ্যোতি,
      হয়তো ধরিবে কভু নাম-হারা স্বপ্নের মুরতি।
                 তবু সে তো স্বপ্ন নয়,
      সব-চেয়ে সত্য মোর, সেই মৃত্যুঞ্জয়,
                 সে আমার প্রেম।
         তারে আমি রাখিয়া এলেম
      অপরিবর্তন অর্ঘ্য তোমার উদ্দেশে।
         পরিবর্তনের স্রোতে আমি যাই ভেসে
             কালের যাত্রায়।
                 হে বন্ধু, বিদায়।

                  তোমার হয় নি কোনো ক্ষতি
   মর্তের মৃত্তিকা মোর, তাই দিয়ে অমৃতমুরতি
           যদি সৃষ্টি করে থাক, তাহারি আরতি
             হোক তব সন্ধ্যাবেলা,
                 পূজার সে খেলা
      ব্যাঘাত পাবে না মোর প্রত্যহের ম্লান স্পর্শ লেগে;
             তৃষার্ত আবেগ-বেগে
      ভ্রষ্ট নাহি হবে তার কোনো ফুল নৈবেদ্যের থালে।
             তোমার মানস-ভোজে সযত্নে সাজালে
      যে ভাবরসের পাত্র বাণীর তৃষায়,
             তার সাথে দিব না মিশায়ে
      যা মোর ধূলির ধন, যা মোর চক্ষের জলে ভিজে।
             আজো তুমি নিজে
             হয়তো-বা করিবে রচন
      মোর স্মৃতিটুকু দিয়ে স্বপ্নাবিষ্ট তোমার বচন।
      ভার তার না রহিবে, না রহিবে দায়।
             হে বন্ধু, বিদায়।

             মোর লাগি করিয়ো না শোক,
      আমার রয়েছে কর্ম, আমার রয়েছে বিশ্বলোক।
             মোর পাত্র রিক্ত হয় নাই--
      শূন্যেরে করিব পূর্ণ, এই ব্রত বহিব সদাই।
      উৎকণ্ঠ আমার লাগি কেহ যদি প্রতীক্ষিয়া থাকে
             সেই ধন্য করিবে আমাকে।
             শুক্লপক্ষ হতে আনি
             রজনীগন্ধার বৃন্তখানি
                      যে পারে সাজাতে
             অর্ঘ্যথালা  কৃষ্ণপক্ষ রাতে,
             যে আমারে দেখিবারে পায়
                 অসীম ক্ষমায়
             ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি,
      এবার পূজায় তারি আপনারে দিতে চাই বলি।
                 তোমারে যা দিয়েছিনু তার
                 পেয়েছ নিঃশেষ অধিকার।
                 হেথা মোর তিলে তিলে দান,
      করুণ মুহূর্তগুলি গণ্ডূষ ভরিয়া করে পান
             হৃদয়-অঞ্জলি হতে মম।
                 ওগো তুমি নিরুপম,
                       হে ঐশ্বর্যবান,
             তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান--
                 গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়।
                       হে বন্ধু, বিদায়।

২. বিদ্রোহী

বল বীর-
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর-
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন আরশ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চিরবিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
বল বীর-
আমি চির উন্নত শির!

আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা-প্রলয়ের আমি নটরাজ,আমি সাইক্লোন,আমি ধ্বংস!
আমি মহাভয়,আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,
আমি দুর্বার,আমি ভেঙে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,আমি দ’লে যাই যত বন্ধন,যত নিয়ম কানুনশৃঙ্খল!
আমি মানি না কো কোন আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো,আমি ভীম ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জটি,আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর
আমি বিদ্রোহী,আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!
বল বীর-
চির-উন্নত মম শির!

আমি ঝঞ্ঝা,আমি ঘূর্ণি,
আমি পথ-সমুখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’।
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,
আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।
আমি হাম্বার,আমি ছায়ানট,আমি হিন্দোল
আমি চল-চঞ্চল,ঠমকি’ ছমকি’
পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’
ফিং দিয়া দিই তিন দোল ;
আমি চপলা-চপল হিন্দোল।
আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা
করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা
আমি উন্মাদ,আমি ঝঞ্ঝা!
আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর;
আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ণ চির-অধীর।
বল বীর-
আমি চির-উন্নত শির!

আমি চিরদুরন্ত দুর্মদ,
আমি দুর্দম, মম প্রাণের পেয়ালা হর্দম্ হ্যায় হর্দম ভরপুর মদ।
আমি হোমশিখা, আমি সাগ্নিক জমদগ্নি,
আমি যজ্ঞ, আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি
আমি সৃষ্টি আমি ধ্বংস আমি লোকালয় আমি শ্মশান,
আমি অবসান নিশাবসান।
আমি ইন্দ্রাণীসুত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য
মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য;
আমি কৃষ্ণকন্ঠ, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা-বারিধির।
আমি ব্যোমকেশ, ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর।
বল বীর –
চির-উন্নত মম শির!
আমি সন্ন্যাসী, সুর-সৈনিক,
আমি যুবরাজ, মম রাজবেশ ম্লান গৈরিক।
আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস
আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ!
আমি বজ্র আমি ঈশান-বিষাণে ওঙ্কার
আমি ইস্রাফিলের শিঙ্গার মহা হুঙ্কার
আমি পিণাক-পাণির ডমরু ত্রিশূল, ধর্মরাজের দন্ড
আমি চক্র ও মহা শঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ প্রচন্ড!
আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, বিশ্বামিত্র-শিষ্য
আমি দাবানল-দাহ, দাহন করিব বিশ্ব।
আমি প্রাণ-খোলা হাসি উল্লাস– আমি সৃষ্টিবৈরী মহাত্রাস,
আমি মহা প্রলয়ের দ্বাদশ রবির রাহু গ্রাস!
আমি কভূ প্রশান্ত-কভূ অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী
আমি অরুণ খুনের তরুণ, আমি বিধির দর্পহারী!
আমি প্রভঞ্জনের উচ্ছ্বাস, আমি বারিধির মহা কল্লোল
আমি উজ্জ্বল, আমি প্রোজ্জ্জ্বল,
আমি উচ্ছল জল-ছল-ছল, চল-ঊর্মির হিন্দোল-দোল!
আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেণু, তন্বী-নয়নে বহ্ণি
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!
আমি উন্মন মন উদাসীর,
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা হুতাশ আমি হুতাশীর।
আমি বন্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারাযত পথিকের
আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ–জ্বালা, প্রিয় লান্চিত বুকে গতি ফের
আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়
চিত চুম্বন-চোর কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর!
আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল-ক’রে দেখা অনুখন
আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা তা’র কাঁকন-চুড়ির কন্-কন্!
আমি চির-শিশু, চির-কিশোর
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচড় কাঁচলি নিচোর!
আমি উত্তর-বায়ু মলয়-অনিল উদাস পূরবী হাওয়া
আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেণু-বীণেগান গাওয়া।
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি
আমি মরু-নির্ঝর ঝর ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি!
আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি, এ কি উন্মাদ আমি উন্মাদ!
আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!
আমি উথ্থান আমি পতন,
আমি অচেতন-চিতে চেতন,
আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী, মানব-বিজয়া-কেতন।
ছুটি ঝড়ের মতন করতালি দিয়া
স্বর্গ মর্ত্য-করতলে
তাজী বোররাক আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলে!
আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নিয়াদ্রি, বাড়াব-বহ্ণি, কালানল
আমি পাতালে মাতাল অগ্নি-পাথার-কলরোল-কল-কোলাহল!
আমি তড়িতে চড়িয়া উড়ে চলি জোর তুড়ি দিয়া দিয়া লম্ফ,
আমি ত্রাস সন্চারি ভুবনে সহসা সন্চারি ভূমিকম্প।
ধরি বাসুকির ফণা জাপটি-
ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনেরপাখা সাপটি।
আমি দেব শিশু আমি চঞ্চল,
আমি ধৃষ্ট আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্ব মায়ের অন্চল!
আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,
মহা- সিন্ধু উতলা ঘুমঘুম
ঘুম চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝঝুম
মম বাঁশরীর তানে পাশরি
আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।
আমি রুষে উঠি’ যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,
ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া!
আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,
কভু ধরনীরে করি বরণীয়া, কভু বিপুল ধ্বংস-ধন্যা
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!
আমি অন্যায় আমি উল্কা আমি শনি,
আমি ধূমকেতু-জ্বালা, বিষধর কাল-ফণী!
আমি ছিন্নমস্তা চন্ডী আমি রণদা সর্বনাশী,
আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!
আমি মৃন্ময় আমি চিন্ময়
আমি অজর অমর অক্ষয় আমি অব্যয়।
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,
বিশ্বের আমি চির-দুর্জয়,
জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,
আমি তাথিয়া তাথিয়া মাথিয়া ফিরি স্বর্গ-পাতাল মর্ত্য!
আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!!
আমি চিনেছি আমারে, আজিকে আমার খুলিয়াগিয়াছে সব বাঁধ!!
আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার
নিঃক্ষত্রিয়া করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!
আমি হল বলরাম-স্কন্ধে
আমি উপাড়ি’ ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।
মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না –
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,
আমি স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!
আমি খেয়ালী-বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
আমি চির-বিদ্রোহী বীর-
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির ।।


৩. মার্চ

৪. বাতাসে লাশের গন্ধ
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যূর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে…
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দু:স্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময় ?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।
এই রক্তমাখা মটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধেছিলো।
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আধাঁর,
আজ তারা আলোহীন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায়।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আরষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা – একি হবে নষ্ট জন্ম ?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল ?

জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন।

বাতাশে লাশের গন্ধ
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দুলে মাংসের তুফান।
মাটিতে রক্তের দাগ –
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়
এ চোখে ঘুম আসেনা। সারারাত আমার ঘুম আসেনা-
তন্দ্রার ভেতরে আমি শুনি ধর্ষিতার করুণ চিৎকার,
নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ
মুন্ডহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বিভৎস্য শরীর
ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে। আমি ঘুমুতে পারিনা, আমি
ঘুমুতে পারিনা…
রক্তের কাফনে মোড়া – কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে
সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা।
স্বাধীনতা, সে আমার – স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন –
স্বাধীনতা – আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।
ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা।

৫. আকাশলীনা

                   - জীবনানন্দ দাশ

সুরঞ্জনা, অইখানে যেয়োনাকো তুমি, 
বোলোনাকো কথা অই যুবকের সাথে; 
ফিরে এসো সুরঞ্জনা : 
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে; 

ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে; 
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার; 
দূর থেকে দূরে - আরও দূরে 
যুবকের সাথে তুমি যেয়োনাকো আর। 

কী কথা তাহার সাথে? - তার সাথে! 
আকাশের আড়ালে আকাশে 
মৃত্তিকার মতো তুমি আজ : 
তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে। 

সুরঞ্জনা, 
তোমার হৃদয় আজ ঘাস : 
বাতাসের ওপারে বাতাস - 
আকাশের ওপারে আকাশ।


৬. বাঁশি


৭. আবার আসিব ফিরে


৮. উচ্চারণগুলি শেঅকের


৯. হুলিয়া


১০. কৃষ্ণকলি

১১. কেউ কথা রাখেনি

১২. বাঁশিওয়ালা

১৩. বনলতা সেন

১৪. আমি কিংবদন্তির কথা বলছি



1 comment:

নির্বাচিত পোস্ট

'অবদমিত অভিমান'- ২০১৭ এর বইমেলায় প্রকাশিতব্য সময় প্রকাশন এর গল্প সংকলনের বই

প্রথম গল্প লিখেছিলাম আজ থেকে ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে।