১. চির উন্নত মম শির
নজরুলের লেখা আমার খুব প্রিয় একটা কবিতা দিলাম।
চৈতী হাওয়া
১৩৩২ বৈশাখ: কল্লোল
চৈতি হাওয়া
হারিয়ে গেছ অন্ধকারে-পাইনি খুঁজে আর,
আজ্কে তোমার আমার মাঝে সপ্ত পারাবার!
আজ্কে তোমার জন্মদিন-
স্মরণ-বেলায় নিদ্রাহীন
হাত্ড়ে ফিরি হারিয়ে-যাওয়ার অকূল অন্ধকার!
এই -সে হেথাই হারিয়ে গেছে কুড়িয়ে-পাওয়া হার!
শূন্য ছিল নিতল দীঘির শীতল কালো জল,
কেন তুমি ফুটলে সেথা ব্যথার নীলোৎপল?
আঁধার দীঘির রাঙলে মুখ,
নিটোল ঢেউ-এর ভাঙলে বুক,-
কোন্ পূজারী নিল ছিঁড়ে? ছিন্ন তোমার দল
ঢেকেছে আজ কোন্ দেবতার কোন্ সে পাষাণ-তল?
অস্ত-খেয়ার হারামাণিক-বোঝাই-করা না’
আস্ছে নিতুই ফিরিয়ে দেওয়ার উদয়-পারের গাঁ
ঘাটে আমি রই ব’সে
আমার মাণিক কই গো সে?
পারাবারের ঢেউ-দোলানী হান্ছে বুকে ঘা!
আমি খুঁজি ভিড়ের মাঝে চেনা কমল-পা!
বইছে আবার চৈতী হাওয়া গুম্রে ওঠে মন,
পেয়েছিলাম এম্নি হাওয়ায় তোমার পরশন।
তেম্নি আবার মহুয়া-মউ
মৌমাছিদের কৃষ্ণ-বউ
পান ক’রে ওই ঢুল্ছে নেশায়, দুল্ছে মহুল বন,
ফুল-সৌখিন্ দখিন হাওয়ায় কানন উচাটন!
প’ড়ছে মনে টগর চাঁপা বেল চামেলি যুঁই,
মধুপ দেখে যাদের শাখা আপ্নি যেত নুই।
হাস্তে তুমি দুলিয়ে ডাল,
গোলাপ হ’য়ে ফুটতো গাল
থর্কমলী আঁউরে যেত তপ্ত ও-গাল ছুঁই!
বকুল শাখা-ব্যকুল হ’ত টলমলাত ভুঁই!
চৈতী রাতের গাইত’ গজল বুলবুলিয়ার রব,
দুপুর বেলায় চবুতরায় কাঁদত কবুতর!
ভুঁই- তারকা সুন্দরী
সজনে ফুলের দল ঝরি’
থোপা থোপা লা ছড়াত দোলন-খোঁপার’ পর।
ঝাজাল হাওয়ায় বাজত উদাস মাছরাঙার স্বর!
পিয়ালবনায় পলাশ ফুলের গেলাস-ভরা মউ!
খেত বঁধুর জড়িয়ে গলা সাঁওতালিয়া বউ!
লুকিয়ে তুমি দেখতে তাই,
বলতে, ‘আমি অমনি চাই!
খোঁপায় দিতাম চাঁপা গুঁজে, ঠোঁটে দিতাম মউ!
হিজল শাখায় ডাকত পাখি “ বউ গো কথা কউ”
ডাকত ডাহুক জল- পায়রা নাচত ভরা বিল,
জোড়া ভুর” ওড়া যেন আসমানে গাঙচিল
হঠাৎ জলে রাখত্ে পা,
কাজলা দীঘির শিউরে গা-
কাঁটা দিয়ে উঠত মৃণাল ফুটত কমল-ঝিল!
ডাগর চোখে লাগত তোমার সাগর দীঘির নীল!
উদাস দুপুর কখন গেছে এখন বিকেল যায়,
ঘুম জড়ানো ঘুমতী নদীর ঘুমুর পরা পায়!
শঙ্খ বাজে মন্দিরে,
সন্ধ্যা আসে বন ঘিরে,
ঝাউ-এর শাখায় ভেজা আঁধার কে পিঁজেছে হায়!
মাঠের বাঁশী বন্-উদাসী ভীম্পলাশী গায়অ
বাউল আজি বাউল হ’ল আমরা তফাতে!
আম-মুকুলের গুঁজি-কাঠি দাও কি খোঁপাতে?
ডাবের শীতল জল দিয়ে
মুখ মাজ’কি আর প্রিয়ে?
প্রজাপতির ডাক-ঝরা সোনার টোপাতে
ভাঙা ভুর” দাও কি জোড়া রাতুল শোভাতে?
বউল ঝ’রে ফ’লেছ আজ থোলো থোলো আম,
রসের পীড়ায় টস্টসে বুক ঝুরছে গোপাবজাম!
কামরাঙারা রাঙল ফের
পীড়ন পেতে ঐ মুখের,
স্মরণ ক’রে চিবুক তোমার, বুকের তোমার ঠাম-
জামর”লে রস ফেটে পড়ে, হায়, কে দেবে দাম!
ক’রেছিলাম চাউনি চয়ন নয়ন হ’তে তোর,
ভেবেছিলুম গাঁথ্ব মালা পাইনে খুঁজে ডোর!
সেই চাহনি নীল-কমল
ভ’রল আমার মানস-জল,
কমল-কাঁটার ঘা লেগেছে মর্মমূলে মোর!
বক্ষে আমার দুলে আঁখির সাতনরী-হার লোর!
তরী আমার কোন্ কিনারায় পাইনে খুঁজে কুল,
স্মরণ-পারের গন্ধ পাঠায় কমলা নেবুর ফুল!
পাহাড়তলীর শালবনায়
বিষের মত নীল ঘনায়!
সাঁঝ প’রেছে ঐ দ্বিতীয়ার-চাঁদ-ইহুদী-দুল!
হায় গো, আমার ভিন্ গাঁয়ে আজ পথ হ’য়েছে ভুল!
কোথায় তুমি কোথায় আমি চৈতে দেখা সেই,
কেঁদে ফিরে যায় যে চৈত-তোমার দেখা নেই!
কন্ঠে কাঁদে একটি স্বর-
কোথায় তুমি বাঁধলে ঘর?
তেমনি ক’রে জাগছে কি রাত আমার আশাতেই?
কুড়িয়ে পাওয়া বেলায় খুঁজি হারিয়ে যাওয়া খেই!
পারাপারের ঘাটে প্রিয় রইনু বেঁধে না’,
এই তরীতে হয়ত তোমার প’ড়বে রাঙা পা!
আবার তোমার সুখ-ছোঁওয়ায়
আকুল দোলা লাগবে না’য়,
এক তরীতে যাব মোরা আর-না-হারা গাঁ
পারাপারের ঘাটে প্রিয় রইনু বেঁধে না’।।
২. শ্রদ্ধাঞ্জলি
তবে,
আমি চিরতরে দূরে চলে যাব,
তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।
(আমি) বাতাস হইয়া জড়াইব কেশে,
বেণী যাবে যবে খুলিতে।।
তোমার সুরের নেশায় যখন
ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন,
রোদন হইয়া আসিব তখন
তোমার বক্ষে দুলিতে।।
আসিবে তোমার পরমোৎসবে
কত প্রিয়জন কে জানে,
মনে প’ড়ে যাবে–কোন্ সে ভিখারী
পায়নি ভিক্ষা এখানে।
তোমার কুঞ্জ-পথে যেতে, হায়!
চমকি’ থামিয়া যাবে বেদনায়
দেখিবে, কে যেন ম’রে মিশে আছে
তোমার পথের ধূলিতে।
-এই গানের কথাগুলো সবসময়ই আমাকে অবশ করে দেয়
এছাড়া একবার বৃটিশ কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে খায়রুল আনাম শাকিলের কন্ঠে শাওন আসিল ফিরে, সে ফিরে এলো না
বরষা ফুরায়ে গেল, আশা তবু্ও গেল না-এই গানটা শুনে তখন থেকে আমি শাকিলের ভক্ত হয়ে গেছি। ইউটিউবে অবশ্য উনার কন্ঠে গানটা খুঁজে পেলাম না, ইয়াসমীন মুশতারীর কন্ঠে একটা পেলাম। নজরুলের গান নিয়ে শবনম মুশতারীর কন্ঠে জাতীয় যাদুঘরে পরিবেশিত গানের অনুষ্ঠান আমার দেখা সেরা গানের আসর। কাঁদতে কাঁদতে অস্থির লাগছিল। সেই থেকে শবনম মুশতারীর প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে অনেক অনেক।
অনেক দিন আগে টিভিতে দেখা নজরুলকে নিয়ে একটা নাটকে
এতো জল ও কাজল চোখে পাষাণি আনলে বল কে?-এই গানটা এতো অদ্ভুত করে কে যেনো গেয়েছিল...এখনও হৃদয় ছুঁয়ে আছে। সেই থেকে এই গানটা আমার কাছে বিশেষ হয়ে গেছে।
এমন আরো অনেক অসাধারণ গান যা আমরা সত্যিই কতোটুকু শুনি প্রশ্ন থেকে যায়।
৩. কবির সমাধীস্থল
৪. কবির রচনা
কবিতা
দোলন-চাঁপা (কবিতা এবং গান) ১৯২৩
বিষের বাঁশি (কবিতা এবং গান) ১৯২৪
ভাঙ্গার গান (কবিতা এবং গান) ১৯২৪
ছায়ানট (কবিতা এবং গান) ১৯২৫
চিত্তনামা (কবিতা এবং গান) ১৯২৫
সাম্যবাদী (কবিতা এবং গান) ১৯২৫
পুবের হাওয়া (কবিতা এবং গান) ১৯২৬
সর্বহারা (কবিতা এবং গান) ১৯২৬
সিন্ধু হিন্দোল (কবিতা এবং গান) ১৯২৭
জিঞ্জীর (কবিতা এবং গান) ১৯২৮
প্রলয় শিখা (কবিতা এবং গান) ১৯৩০
শেষ সওগাত (কবিতা এবং গান) ১৯৫৮
সংগীতমূল নিবন্ধ: নজরুলগীতি
বুলবুল (গান) ১৯২৮
সন্ধ্যা (গান) ১৯২৯
চোখের চাতক (গান) ১৯২৯
নজরুল গীতিকা (গান সংগ্রহ) ১৯৩০
নজরুল স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৩১
চন্দ্রবিন্দু (গান) ১৯৩১
সুরসাকী (গান) ১৯৩২
বনগীতি (গান) ১৯৩১
জুলফিকার (গান) ১৯৩১
গুল বাগিচা (গান) ১৯৩৩
গীতি শতদল (গান) ১৯৩৪
সুর মুকুর (স্বরলিপি) ১৯৩৪
গানের মালা (গান) ১৯৩৪
স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৪৯
বুলবুল দ্বিতীয় ভাগ (গান) ১৯৫২
রাঙ্গা জবা (শ্যামা সংগীত) ১৯৬৬
ছোট গল্প
ব্যাথার দান (ছোট গল্প) ১৯২২
রিক্তের বেদন (ছোট গল্প) ১৯২৫
শিউলি মালা (গল্প) ১৯৩১
উপন্যাস
বাঁধন হারা (উপন্যাস) ১৯২৭
মৃত্যুক্ষুধা (উপন্যাস) ১৯৩০
কুহেলিকা (উপন্যাস) ১৯৩১
নাটক
ঝিলিমিলি (নাটক) ১৯৩০
আলেয়া (গীতিনাট্য) ১৯৩১
পুতুলের বিয়ে (কিশোর নাটক) ১৯৩৩
মধুমালা (গীতিনাট্য) ১৯৬০
ঝড় (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬০
পিলে পটকা পুতুলের বিয়ে (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬৪
প্রবন্ধ এবং নিবন্ধ
যুগবানী (প্রবন্ধ) ১৯২৬
ঝিঙ্গে ফুল (প্রবন্ধ) ১৯২৬
দুর্দিনের যাত্রী (প্রবন্ধ) ১৯২৬
রুদ্র মঙ্গল (প্রবন্ধ) ১৯২৭
ধুমকেতু (প্রবন্ধ) ১৯৬১
অনুবাদ এবং বিবিধ
রাজবন্দীর জবানবন্দী (গান) ১৯২৩
দিওয়ানে হাফিজ (অনুবাদ) ১৯৩০
কাব্যে আমপারা (অনুবাদ) ১৯৩৩
মক্তব সাহিত্য (মক্তবের পাঠ্যবই) ১৯৩৫
রুবাইয়াতে ওমর খৈয়াম (অনুবাদ) ১৯৫৮
নজরুল রচনাবলী (ভলিউম ১-৪,বাংলা একাডেমী)১৯৯৩
সঙ্গীত গ্রন্থাবলী
বুলবুল (১ম খন্ড-১৯২৮, ২য় খন্ড-১৯৫২)
চোখের চাতক (১৯২৯)
চন্দ্রবিন্দু (১৯৪৬)
নজরুল গীতিকা (১৯৩০)
নজরুল স্বরলিপি (১৯৩১)
সুরসাকী (১৯৩১)
জুলফিকার (১৯৩২)
বনগীতি (১৯৩২)
গুলবাগিচা (১৯৩৩)
গীতিশতদল (১৯৩৪)
সুরলিপি (১৯৩৪)
সুর-মুকুর (১৯৩৪)
গানের মালা (১৯৩৪)
৫. দূর থেকে দেখা
নজরুল আর রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কেউ কেউ তুলনামূলক যাচাই করতে তর্কে লেগে যান...তাদের জন্যে সায়ানের এই গানটা জবাব হতে পারে।
♥ দু'চোখ দিয়েই দেখোঃ ইউটিউব লিংক
আজ শিক্ষিত লোকে গবেষণা করে
কার চেয়ে কে বড়
কাজী নজরুল, নাকি রবীন্দ্রনাথ
বলো কে বেশী বড়
এলো নজরুল, এলো রবীন্দ্রনাথ
বাঙালী তোমার জন্য
তবু গেলো না গেলো না, এখনো গেলো না
বাঙালী মনের দৈন্য
কোথায় সঞ্চয়িতা আর সঞ্চিতাই বা কোথায়
সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতা আজ দাঁড়িপাল্লায়
না, না, কারো অন্তরে নয়
দ্যাখো সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতা
আজ দাঁড়িপাল্লায়
আজ নিচ্ছে ওজন, দেখছে বাঙালী
কোনটা বেশী ভারী
কোনটা পরিত্যাজ্য আর
কোনটা দরকারী
দ্যাখো সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতার কোনটা বেশী ভারী
কোনটা পরিত্যাজ্য আর কোনটা দরকারী
তর্কে নেমেছে, নেমেছে বাঙালী
আজকে কোমর বেঁধে
মাঝখানে পড়ে মরছে শিল্প
পাথর চোখে কেঁদে
এক চোখে চুরুলিয়া আর
এক চোখে জোড়াসাঁকো
এক চোখ বুজে থেকো না বাঙালী
দু'চোখ দিয়েই দ্যাখো
কে ছিল ব্রাহ্ম কবি আর
কে ছিল মুসলমান
কার কবিতার সংখ্যা বেশী
কার বেশী ছিল গান
কে ছিল দোকানদার আর
কার বাবা জমিদার
কে জিতলো পুরস্কার আর
কে পেলো কারাগার
কার গান হলো শুধু গীতি আর
কার গান সংগীত
কার স্বরলিপি আছে, কার নেই
বলো কে বেশী পণ্ডিত
রবীন্দ্রনাথ শান্ত সমুদ্র
নজরুল তাতে টালমাটাল জোয়ার
রবীন্দ্রনাথ মুক্ত মহাকাশ
নজরুল সেই মহাকাশ জুড়ে
তুফান ডাকা বজ্র অহংকার
কথা ও সুরঃ সায়ান
৬. নজরুল কর্ণারের ভেতরের অংশ
♥ নজরুল সংগীত: এমপিথ্রিতে
৭. নজরুল কর্ণার -প্রকাশণা ও প্রদর্শণী, বিক্রয়
চলচ্চিত্রে নজরুল
১৯৩১ সালে ধুপছায়া নামে একটি চলচিত্র পরিচালনা করেন কবি নজরুল। সেটাতে তিনি বিষ্ণু নামে একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
তারপর ১৯৩৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ দে পরিচালিত ধ্রুব চলচিত্রে গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক ছিলেন তিনি। অই চলচিত্রে নারদের চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
১৯৩৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রিয়নাথ গঙ্গোপধ্যায় এর পাতালপুরী চলচিত্রে সংগীত রচনা ও পরিচালনা করেন।
তার দুই বছর পর মুক্তি পায় গ্রহের ফের।
১৯৩৮ সালে মুক্তি পায় গোরা ও বিদ্যাপতি। গোরা চলচিত্রের কাহিনীকার, গীতিকার ও সুরকার তো ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নজরুল ছিলেন সংগীত পরিচালক।
বিদ্যাপতির কাহিনীকার, গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন নজরুল। বিদ্যাপতি ছবিটি পরে বলিউডে রিমেক করা হয়।
১৯৩৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সাপুড়ে ছবির কাহিনীকার ও গীতিকার ছিলেন নজরুল।
১৯৪১ সালে মুক্তি পায় নন্দিনী, যেটার জন্য একটা গান লিখে তাতে সুর করে দেন।
পরের বছর মুক্তি পায় চৌরঙ্গী। এটারও হিন্দী রিমেক করা হয়। বাংলা ও হিন্দী উভয়টাতে নজরুল গীতিকার হিসেবে ছিলেন।
এরপর ১৯৪৩ সালে তিনি ‘শহর থেকে দূরে’, ‘দিকশূল’ ছবিগুলোতে কাজ করেন। ‘শহর থেকে দূরে’ ছবিটিতে তিনি গীতিকার হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও ‘দিলরুবা’, ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ ছবিগুলোর সঙ্গেও নাকি যুক্ত ছিলেন আমাদের বিদ্রোহী কবি।
চলচ্চিত্রের অংশটির জন্যে ব্লগার জিয়া চৌধুরীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।
৮. নজরুল কর্ণার বাইরের অংশ
৯. জাতীয় কবির সমাধীসৌধ
নজরুলের লেখা আমার খুব প্রিয় একটা কবিতা দিলাম।
চৈতী হাওয়া
১৩৩২ বৈশাখ: কল্লোল
চৈতি হাওয়া
হারিয়ে গেছ অন্ধকারে-পাইনি খুঁজে আর,
আজ্কে তোমার আমার মাঝে সপ্ত পারাবার!
আজ্কে তোমার জন্মদিন-
স্মরণ-বেলায় নিদ্রাহীন
হাত্ড়ে ফিরি হারিয়ে-যাওয়ার অকূল অন্ধকার!
এই -সে হেথাই হারিয়ে গেছে কুড়িয়ে-পাওয়া হার!
শূন্য ছিল নিতল দীঘির শীতল কালো জল,
কেন তুমি ফুটলে সেথা ব্যথার নীলোৎপল?
আঁধার দীঘির রাঙলে মুখ,
নিটোল ঢেউ-এর ভাঙলে বুক,-
কোন্ পূজারী নিল ছিঁড়ে? ছিন্ন তোমার দল
ঢেকেছে আজ কোন্ দেবতার কোন্ সে পাষাণ-তল?
অস্ত-খেয়ার হারামাণিক-বোঝাই-করা না’
আস্ছে নিতুই ফিরিয়ে দেওয়ার উদয়-পারের গাঁ
ঘাটে আমি রই ব’সে
আমার মাণিক কই গো সে?
পারাবারের ঢেউ-দোলানী হান্ছে বুকে ঘা!
আমি খুঁজি ভিড়ের মাঝে চেনা কমল-পা!
বইছে আবার চৈতী হাওয়া গুম্রে ওঠে মন,
পেয়েছিলাম এম্নি হাওয়ায় তোমার পরশন।
তেম্নি আবার মহুয়া-মউ
মৌমাছিদের কৃষ্ণ-বউ
পান ক’রে ওই ঢুল্ছে নেশায়, দুল্ছে মহুল বন,
ফুল-সৌখিন্ দখিন হাওয়ায় কানন উচাটন!
প’ড়ছে মনে টগর চাঁপা বেল চামেলি যুঁই,
মধুপ দেখে যাদের শাখা আপ্নি যেত নুই।
হাস্তে তুমি দুলিয়ে ডাল,
গোলাপ হ’য়ে ফুটতো গাল
থর্কমলী আঁউরে যেত তপ্ত ও-গাল ছুঁই!
বকুল শাখা-ব্যকুল হ’ত টলমলাত ভুঁই!
চৈতী রাতের গাইত’ গজল বুলবুলিয়ার রব,
দুপুর বেলায় চবুতরায় কাঁদত কবুতর!
ভুঁই- তারকা সুন্দরী
সজনে ফুলের দল ঝরি’
থোপা থোপা লা ছড়াত দোলন-খোঁপার’ পর।
ঝাজাল হাওয়ায় বাজত উদাস মাছরাঙার স্বর!
পিয়ালবনায় পলাশ ফুলের গেলাস-ভরা মউ!
খেত বঁধুর জড়িয়ে গলা সাঁওতালিয়া বউ!
লুকিয়ে তুমি দেখতে তাই,
বলতে, ‘আমি অমনি চাই!
খোঁপায় দিতাম চাঁপা গুঁজে, ঠোঁটে দিতাম মউ!
হিজল শাখায় ডাকত পাখি “ বউ গো কথা কউ”
ডাকত ডাহুক জল- পায়রা নাচত ভরা বিল,
জোড়া ভুর” ওড়া যেন আসমানে গাঙচিল
হঠাৎ জলে রাখত্ে পা,
কাজলা দীঘির শিউরে গা-
কাঁটা দিয়ে উঠত মৃণাল ফুটত কমল-ঝিল!
ডাগর চোখে লাগত তোমার সাগর দীঘির নীল!
উদাস দুপুর কখন গেছে এখন বিকেল যায়,
ঘুম জড়ানো ঘুমতী নদীর ঘুমুর পরা পায়!
শঙ্খ বাজে মন্দিরে,
সন্ধ্যা আসে বন ঘিরে,
ঝাউ-এর শাখায় ভেজা আঁধার কে পিঁজেছে হায়!
মাঠের বাঁশী বন্-উদাসী ভীম্পলাশী গায়অ
বাউল আজি বাউল হ’ল আমরা তফাতে!
আম-মুকুলের গুঁজি-কাঠি দাও কি খোঁপাতে?
ডাবের শীতল জল দিয়ে
মুখ মাজ’কি আর প্রিয়ে?
প্রজাপতির ডাক-ঝরা সোনার টোপাতে
ভাঙা ভুর” দাও কি জোড়া রাতুল শোভাতে?
বউল ঝ’রে ফ’লেছ আজ থোলো থোলো আম,
রসের পীড়ায় টস্টসে বুক ঝুরছে গোপাবজাম!
কামরাঙারা রাঙল ফের
পীড়ন পেতে ঐ মুখের,
স্মরণ ক’রে চিবুক তোমার, বুকের তোমার ঠাম-
জামর”লে রস ফেটে পড়ে, হায়, কে দেবে দাম!
ক’রেছিলাম চাউনি চয়ন নয়ন হ’তে তোর,
ভেবেছিলুম গাঁথ্ব মালা পাইনে খুঁজে ডোর!
সেই চাহনি নীল-কমল
ভ’রল আমার মানস-জল,
কমল-কাঁটার ঘা লেগেছে মর্মমূলে মোর!
বক্ষে আমার দুলে আঁখির সাতনরী-হার লোর!
তরী আমার কোন্ কিনারায় পাইনে খুঁজে কুল,
স্মরণ-পারের গন্ধ পাঠায় কমলা নেবুর ফুল!
পাহাড়তলীর শালবনায়
বিষের মত নীল ঘনায়!
সাঁঝ প’রেছে ঐ দ্বিতীয়ার-চাঁদ-ইহুদী-দুল!
হায় গো, আমার ভিন্ গাঁয়ে আজ পথ হ’য়েছে ভুল!
কোথায় তুমি কোথায় আমি চৈতে দেখা সেই,
কেঁদে ফিরে যায় যে চৈত-তোমার দেখা নেই!
কন্ঠে কাঁদে একটি স্বর-
কোথায় তুমি বাঁধলে ঘর?
তেমনি ক’রে জাগছে কি রাত আমার আশাতেই?
কুড়িয়ে পাওয়া বেলায় খুঁজি হারিয়ে যাওয়া খেই!
পারাপারের ঘাটে প্রিয় রইনু বেঁধে না’,
এই তরীতে হয়ত তোমার প’ড়বে রাঙা পা!
আবার তোমার সুখ-ছোঁওয়ায়
আকুল দোলা লাগবে না’য়,
এক তরীতে যাব মোরা আর-না-হারা গাঁ
পারাপারের ঘাটে প্রিয় রইনু বেঁধে না’।।
২. শ্রদ্ধাঞ্জলি
তবে,
আমি চিরতরে দূরে চলে যাব,
তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।
(আমি) বাতাস হইয়া জড়াইব কেশে,
বেণী যাবে যবে খুলিতে।।
তোমার সুরের নেশায় যখন
ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন,
রোদন হইয়া আসিব তখন
তোমার বক্ষে দুলিতে।।
আসিবে তোমার পরমোৎসবে
কত প্রিয়জন কে জানে,
মনে প’ড়ে যাবে–কোন্ সে ভিখারী
পায়নি ভিক্ষা এখানে।
তোমার কুঞ্জ-পথে যেতে, হায়!
চমকি’ থামিয়া যাবে বেদনায়
দেখিবে, কে যেন ম’রে মিশে আছে
তোমার পথের ধূলিতে।
আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।
(আমি) বাতাস হইয়া জড়াইব কেশে, বেণী যাবে যবে খুলিতে।।
তোমার সুরের নেশায় যখন/ ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন,
রোদন হইয়া আসিব তখন তোমার বক্ষে দুলিতে।।
আসিবে তোমার পরমোৎসবে কত প্রিয়জন কে জানে,
মনে প’ড়ে যাবে–কোন্ সে ভিখারী পায়নি ভিক্ষা এখানে।
তোমার কুঞ্জ-পথে যেতে, হায়! / চমকি’ থামিয়া যাবে বেদনায়
দেখিবে, কে যেন ম’রে মিশে আছে তোমার পথের ধূলিতে। - See more at: http://www.ebanglalyrics.com/1657#sthash.6kS5qMQ6.dpuf
(আমি) বাতাস হইয়া জড়াইব কেশে, বেণী যাবে যবে খুলিতে।।
তোমার সুরের নেশায় যখন/ ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন,
রোদন হইয়া আসিব তখন তোমার বক্ষে দুলিতে।।
আসিবে তোমার পরমোৎসবে কত প্রিয়জন কে জানে,
মনে প’ড়ে যাবে–কোন্ সে ভিখারী পায়নি ভিক্ষা এখানে।
তোমার কুঞ্জ-পথে যেতে, হায়! / চমকি’ থামিয়া যাবে বেদনায়
দেখিবে, কে যেন ম’রে মিশে আছে তোমার পথের ধূলিতে। - See more at: http://www.ebanglalyrics.com/1657#sthash.6kS5qMQ6.dpuf
আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেবনা ভুলিতে।
(আমি) বাতাস হইয়া জড়াইব কেশে, বেণী যাবে যবে খুলিতে।।
তোমার সুরের নেশায় যখন/ ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন,
রোদন হইয়া আসিব তখন তোমার বক্ষে দুলিতে।।
আসিবে তোমার পরমোৎসবে কত প্রিয়জন কে জানে,
মনে প’ড়ে যাবে–কোন্ সে ভিখারী পায়নি ভিক্ষা এখানে।
তোমার কুঞ্জ-পথে যেতে, হায়! / চমকি’ থামিয়া যাবে বেদনায়
দেখিবে, কে যেন ম’রে মিশে আছে তোমার পথের ধূলিতে। - See more at: http://www.ebanglalyrics.com/1657#sthash.6kS5qMQ6.dpuf
(আমি) বাতাস হইয়া জড়াইব কেশে, বেণী যাবে যবে খুলিতে।।
তোমার সুরের নেশায় যখন/ ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন,
রোদন হইয়া আসিব তখন তোমার বক্ষে দুলিতে।।
আসিবে তোমার পরমোৎসবে কত প্রিয়জন কে জানে,
মনে প’ড়ে যাবে–কোন্ সে ভিখারী পায়নি ভিক্ষা এখানে।
তোমার কুঞ্জ-পথে যেতে, হায়! / চমকি’ থামিয়া যাবে বেদনায়
দেখিবে, কে যেন ম’রে মিশে আছে তোমার পথের ধূলিতে। - See more at: http://www.ebanglalyrics.com/1657#sthash.6kS5qMQ6.dpuf
-এই গানের কথাগুলো সবসময়ই আমাকে অবশ করে দেয়
এছাড়া একবার বৃটিশ কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে খায়রুল আনাম শাকিলের কন্ঠে শাওন আসিল ফিরে, সে ফিরে এলো না
বরষা ফুরায়ে গেল, আশা তবু্ও গেল না-এই গানটা শুনে তখন থেকে আমি শাকিলের ভক্ত হয়ে গেছি। ইউটিউবে অবশ্য উনার কন্ঠে গানটা খুঁজে পেলাম না, ইয়াসমীন মুশতারীর কন্ঠে একটা পেলাম। নজরুলের গান নিয়ে শবনম মুশতারীর কন্ঠে জাতীয় যাদুঘরে পরিবেশিত গানের অনুষ্ঠান আমার দেখা সেরা গানের আসর। কাঁদতে কাঁদতে অস্থির লাগছিল। সেই থেকে শবনম মুশতারীর প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে অনেক অনেক।
অনেক দিন আগে টিভিতে দেখা নজরুলকে নিয়ে একটা নাটকে
এতো জল ও কাজল চোখে পাষাণি আনলে বল কে?-এই গানটা এতো অদ্ভুত করে কে যেনো গেয়েছিল...এখনও হৃদয় ছুঁয়ে আছে। সেই থেকে এই গানটা আমার কাছে বিশেষ হয়ে গেছে।
এমন আরো অনেক অসাধারণ গান যা আমরা সত্যিই কতোটুকু শুনি প্রশ্ন থেকে যায়।
৩. কবির সমাধীস্থল
৪. কবির রচনা
কবিতা
অগ্নিবীণা (কবিতা) ১৯২২
সঞ্চিতা (কবিতা সংকলন) ১৯২৫
ফনীমনসা (কবিতা) ১৯২৭
চক্রবাক (কবিতা) ১৯২৯
সাতভাই চম্পা (কবিতা) ১৯৩৩
নির্ঝর (কবিতা) ১৯৩৯
নতুন চাঁদ (কবিতা) ১৯৩৯
মরুভাস্কর (কবিতা) ১৯৫১
সঞ্চয়ন (কবিতা সংকলন) ১৯৫৫
নজরুল ইসলাম: ইসলামী কবিতা (কবিতা সংকলন) ১৯৮২
কবিতা ও সংগীত
সঞ্চিতা (কবিতা সংকলন) ১৯২৫
ফনীমনসা (কবিতা) ১৯২৭
চক্রবাক (কবিতা) ১৯২৯
সাতভাই চম্পা (কবিতা) ১৯৩৩
নির্ঝর (কবিতা) ১৯৩৯
নতুন চাঁদ (কবিতা) ১৯৩৯
মরুভাস্কর (কবিতা) ১৯৫১
সঞ্চয়ন (কবিতা সংকলন) ১৯৫৫
নজরুল ইসলাম: ইসলামী কবিতা (কবিতা সংকলন) ১৯৮২
কবিতা ও সংগীত
দোলন-চাঁপা (কবিতা এবং গান) ১৯২৩
বিষের বাঁশি (কবিতা এবং গান) ১৯২৪
ভাঙ্গার গান (কবিতা এবং গান) ১৯২৪
ছায়ানট (কবিতা এবং গান) ১৯২৫
চিত্তনামা (কবিতা এবং গান) ১৯২৫
সাম্যবাদী (কবিতা এবং গান) ১৯২৫
পুবের হাওয়া (কবিতা এবং গান) ১৯২৬
সর্বহারা (কবিতা এবং গান) ১৯২৬
সিন্ধু হিন্দোল (কবিতা এবং গান) ১৯২৭
জিঞ্জীর (কবিতা এবং গান) ১৯২৮
প্রলয় শিখা (কবিতা এবং গান) ১৯৩০
শেষ সওগাত (কবিতা এবং গান) ১৯৫৮
সংগীতমূল নিবন্ধ: নজরুলগীতি
বুলবুল (গান) ১৯২৮
সন্ধ্যা (গান) ১৯২৯
চোখের চাতক (গান) ১৯২৯
নজরুল গীতিকা (গান সংগ্রহ) ১৯৩০
নজরুল স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৩১
চন্দ্রবিন্দু (গান) ১৯৩১
সুরসাকী (গান) ১৯৩২
বনগীতি (গান) ১৯৩১
জুলফিকার (গান) ১৯৩১
গুল বাগিচা (গান) ১৯৩৩
গীতি শতদল (গান) ১৯৩৪
সুর মুকুর (স্বরলিপি) ১৯৩৪
গানের মালা (গান) ১৯৩৪
স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৪৯
বুলবুল দ্বিতীয় ভাগ (গান) ১৯৫২
রাঙ্গা জবা (শ্যামা সংগীত) ১৯৬৬
ছোট গল্প
ব্যাথার দান (ছোট গল্প) ১৯২২
রিক্তের বেদন (ছোট গল্প) ১৯২৫
শিউলি মালা (গল্প) ১৯৩১
উপন্যাস
বাঁধন হারা (উপন্যাস) ১৯২৭
মৃত্যুক্ষুধা (উপন্যাস) ১৯৩০
কুহেলিকা (উপন্যাস) ১৯৩১
নাটক
ঝিলিমিলি (নাটক) ১৯৩০
আলেয়া (গীতিনাট্য) ১৯৩১
পুতুলের বিয়ে (কিশোর নাটক) ১৯৩৩
মধুমালা (গীতিনাট্য) ১৯৬০
ঝড় (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬০
পিলে পটকা পুতুলের বিয়ে (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬৪
প্রবন্ধ এবং নিবন্ধ
যুগবানী (প্রবন্ধ) ১৯২৬
ঝিঙ্গে ফুল (প্রবন্ধ) ১৯২৬
দুর্দিনের যাত্রী (প্রবন্ধ) ১৯২৬
রুদ্র মঙ্গল (প্রবন্ধ) ১৯২৭
ধুমকেতু (প্রবন্ধ) ১৯৬১
অনুবাদ এবং বিবিধ
রাজবন্দীর জবানবন্দী (গান) ১৯২৩
দিওয়ানে হাফিজ (অনুবাদ) ১৯৩০
কাব্যে আমপারা (অনুবাদ) ১৯৩৩
মক্তব সাহিত্য (মক্তবের পাঠ্যবই) ১৯৩৫
রুবাইয়াতে ওমর খৈয়াম (অনুবাদ) ১৯৫৮
নজরুল রচনাবলী (ভলিউম ১-৪,বাংলা একাডেমী)১৯৯৩
সঙ্গীত গ্রন্থাবলী
বুলবুল (১ম খন্ড-১৯২৮, ২য় খন্ড-১৯৫২)
চোখের চাতক (১৯২৯)
চন্দ্রবিন্দু (১৯৪৬)
নজরুল গীতিকা (১৯৩০)
নজরুল স্বরলিপি (১৯৩১)
সুরসাকী (১৯৩১)
জুলফিকার (১৯৩২)
বনগীতি (১৯৩২)
গুলবাগিচা (১৯৩৩)
গীতিশতদল (১৯৩৪)
সুরলিপি (১৯৩৪)
সুর-মুকুর (১৯৩৪)
গানের মালা (১৯৩৪)
৫. দূর থেকে দেখা
নজরুল আর রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কেউ কেউ তুলনামূলক যাচাই করতে তর্কে লেগে যান...তাদের জন্যে সায়ানের এই গানটা জবাব হতে পারে।
♥ দু'চোখ দিয়েই দেখোঃ ইউটিউব লিংক
আজ শিক্ষিত লোকে গবেষণা করে
কার চেয়ে কে বড়
কাজী নজরুল, নাকি রবীন্দ্রনাথ
বলো কে বেশী বড়
এলো নজরুল, এলো রবীন্দ্রনাথ
বাঙালী তোমার জন্য
তবু গেলো না গেলো না, এখনো গেলো না
বাঙালী মনের দৈন্য
কোথায় সঞ্চয়িতা আর সঞ্চিতাই বা কোথায়
সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতা আজ দাঁড়িপাল্লায়
না, না, কারো অন্তরে নয়
দ্যাখো সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতা
আজ দাঁড়িপাল্লায়
আজ নিচ্ছে ওজন, দেখছে বাঙালী
কোনটা বেশী ভারী
কোনটা পরিত্যাজ্য আর
কোনটা দরকারী
দ্যাখো সঞ্চিতা আর সঞ্চয়িতার কোনটা বেশী ভারী
কোনটা পরিত্যাজ্য আর কোনটা দরকারী
তর্কে নেমেছে, নেমেছে বাঙালী
আজকে কোমর বেঁধে
মাঝখানে পড়ে মরছে শিল্প
পাথর চোখে কেঁদে
এক চোখে চুরুলিয়া আর
এক চোখে জোড়াসাঁকো
এক চোখ বুজে থেকো না বাঙালী
দু'চোখ দিয়েই দ্যাখো
কে ছিল ব্রাহ্ম কবি আর
কে ছিল মুসলমান
কার কবিতার সংখ্যা বেশী
কার বেশী ছিল গান
কে ছিল দোকানদার আর
কার বাবা জমিদার
কে জিতলো পুরস্কার আর
কে পেলো কারাগার
কার গান হলো শুধু গীতি আর
কার গান সংগীত
কার স্বরলিপি আছে, কার নেই
বলো কে বেশী পণ্ডিত
রবীন্দ্রনাথ শান্ত সমুদ্র
নজরুল তাতে টালমাটাল জোয়ার
রবীন্দ্রনাথ মুক্ত মহাকাশ
নজরুল সেই মহাকাশ জুড়ে
তুফান ডাকা বজ্র অহংকার
কথা ও সুরঃ সায়ান
৬. নজরুল কর্ণারের ভেতরের অংশ
♥ নজরুল সংগীত: এমপিথ্রিতে
৭. নজরুল কর্ণার -প্রকাশণা ও প্রদর্শণী, বিক্রয়
চলচ্চিত্রে নজরুল
১৯৩১ সালে ধুপছায়া নামে একটি চলচিত্র পরিচালনা করেন কবি নজরুল। সেটাতে তিনি বিষ্ণু নামে একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
তারপর ১৯৩৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ দে পরিচালিত ধ্রুব চলচিত্রে গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক ছিলেন তিনি। অই চলচিত্রে নারদের চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
১৯৩৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রিয়নাথ গঙ্গোপধ্যায় এর পাতালপুরী চলচিত্রে সংগীত রচনা ও পরিচালনা করেন।
তার দুই বছর পর মুক্তি পায় গ্রহের ফের।
১৯৩৮ সালে মুক্তি পায় গোরা ও বিদ্যাপতি। গোরা চলচিত্রের কাহিনীকার, গীতিকার ও সুরকার তো ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নজরুল ছিলেন সংগীত পরিচালক।
বিদ্যাপতির কাহিনীকার, গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন নজরুল। বিদ্যাপতি ছবিটি পরে বলিউডে রিমেক করা হয়।
১৯৩৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সাপুড়ে ছবির কাহিনীকার ও গীতিকার ছিলেন নজরুল।
১৯৪১ সালে মুক্তি পায় নন্দিনী, যেটার জন্য একটা গান লিখে তাতে সুর করে দেন।
পরের বছর মুক্তি পায় চৌরঙ্গী। এটারও হিন্দী রিমেক করা হয়। বাংলা ও হিন্দী উভয়টাতে নজরুল গীতিকার হিসেবে ছিলেন।
এরপর ১৯৪৩ সালে তিনি ‘শহর থেকে দূরে’, ‘দিকশূল’ ছবিগুলোতে কাজ করেন। ‘শহর থেকে দূরে’ ছবিটিতে তিনি গীতিকার হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও ‘দিলরুবা’, ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ ছবিগুলোর সঙ্গেও নাকি যুক্ত ছিলেন আমাদের বিদ্রোহী কবি।
চলচ্চিত্রের অংশটির জন্যে ব্লগার জিয়া চৌধুরীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।
৮. নজরুল কর্ণার বাইরের অংশ
৯. জাতীয় কবির সমাধীসৌধ
তথ্যসূত্র: ছবি- নিজ এ্যালবাম ক্যামেরা- নোকিয়া ৭০০ Canon EOS Rebel T3 প্রথম ছবিটা নেট থেকে নিয়ে এডিট করা রচনা-নজরুলের রচনা (প্রবেশের তারিখ ১৭-৮-২০১৪) |
No comments:
Post a Comment