সাধারণত একটি বেশি ক্ষতিকর ভয়ের
পরিবর্তে অন্য কিছু ভয়ের (কম ক্ষতিকর) সৃষ্টি করে উৎকন্ঠার উপশম ঘটানো। যেমন-অনেক নারীই তার যৌনবৃত্তি পরিতৃপ্তির আকাঙ্খাকে অবচেতন মনে দমন করতে যেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়ার ভয়ের প্রতিকল্প হিসেবে দাড় করান এবং প্রেমিকের সাথে কোন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে আতঙ্কিত থাকেন। আতঙ্ক বিভিন্ন ধরনেরহতে পারে, আজকে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় নিয়ে বলার চেষ্টা করবো-
১সোশাল ফোবিয়া /সামাজিক আতঙ্ক
অনেক লোকের সামনে নিজেকে উপযুক্ত ভাবে উপস্থাপন করতে না পারার কারণেও আতঙ্ক তৈরি হয়ে থাকে ফলে তারা অনেক লোকের সামনে যেতে আতঙ্কিত থাকে এবং কিছুটা নিভৃত জীবন-যাপন করে। এর মধ্যে শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আতঙ্কও উল্লেখ করা যেতে পারে
কারণ: এটি অনেক সময় সামাজিক অভিযোজন ক্ষমতার তুলনামূলকভাবে কম থাকায় এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২. এগোড়া ফোবিয়া /বিশালতার আতঙ্ক
এটি সাধারণত দেখা যায়, খুব ভীড়ের মধ্যে যেখান থেকে সহজেই নিজেকে বের করে আনা যায় না, অনেক বড় কোন মাঠে, বনে, নদীতে এদের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। অনেকে স্টেডিয়ামে এজন্যই খেলা দেখতে যেতে চান না ইত্যাদি।
কারণ: কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে অনেক সময়ই ভীড়ে চাপা পড়ে মানুষের নিহত/আহত হওয়ার ঘটনা, নারীর যৌন হয়রানি, সঙ্গের শিশু থাকলে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ইত্যাদি; বনে বিভিন্ন হিংস্র জন্তুর আক্রমণের শিকার হওয়ার ঘটনা লোক মুখে শুনে বা টিভিতে দেখে এই ফোবিয়ার সৃষ্টি হতে পারে; আর নদীতেও বিভিন্ন দূর্ঘটনার শিকার বিশেষ করে সাতার জানা না থাকলে অনেকেই ফেরি বা লঞ্চে উঠতে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করেন না ইত্যাদি।
৩.হাইট ফোবিয়া /উচ্চতা আতঙ্ক
অনেক উচুতে উঠার পর অনেকেরই এধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এদের সাধারণত অনেক উচুতে উঠলে ভয় পায়, যেমন দেখা যায়
ক. বসুন্ধরা মার্কেটের ক্যাপসুল লিফটে উঠার পর অনেকেই লিফট্ থেকে নিচের দিকে বাইরে তাকিয়ে আতঙ্কিত হয়ে যান, তারা মুলত ধারণা লিফট উচু থেকে পরে দুর্ঘটনার আশংকায় এমন করে থাকেন।
খ. উচু ছাদের উপর উঠে ছাদের কার্নিশে যেতেও ভয় পেতে দেখা যায় অনেককেই, এক্ষেত্রে ছাদ থেকে পড়ে দূর্ঘটনা ঘটার আশংকা থেকেই সাধারণত এমনটি হয়ে থাকে।
৪.সামু ফোবিয়া (সামহোয়ারইন ব্লগে ব্লগিং করা নিয়ে আতঙ্ক)
i. ব্যান খাওয়ার আতঙ্ক:
অনেকেই নিজের নামে নিক নিয়ে থাকেন তখন তার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য অন্য ব্লগার দ্বারা মানসিক আক্রমনের শিকার হলেও তিনি এর প্রতিবাদ শক্ত ভাবে করতে সাহস করেন না নিজের সাধের নিকটা ব্যান হয়ে যাওয়ার ভয়ে(এজন্যই হয়তো এতো মাল্টি নিকের কথা শোনা যায় ইত্যাদি।
ii. ছাগু ট্যাগ খাওয়ার আতঙ্ক:
নতুন ব্লগাররা ছাগুদের ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে সবার ব্লগেই যাওয়ার চেষ্টা করে আর পুরনো ব্লগাররা কোন বিবেচনা না করেই তাকে ছাগু ট্যাগ দিয়ে থাকে অনেক সময়-এখানে পুরনো ব্লগারদের হিসেব হচ্ছে যেহেতু তুলনামুলকভাবে নতুন এই ব্লগারের বিশটা কমেন্টের মধ্যে একটা বা দুইটা কমেন্ট চিহ্নিত ছাগুর ব্লগে করা(তাহলে নতুনদেরকে ছাগু চেনানোর ব্যাপারে পুরনোদেরও দায়িত্ব আছে, এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যেই পরে)
iii. সাইকোদের চতুর আক্রমণের শিকার হওয়ার আতঙ্ক: সামুর মতো বিশাল (এক লক্ষেরও বেশি নিক!) এই পরিসরে একজন ব্লগারের পক্ষে সবার ব্লগে যেয়ে কমেন্ট করা সম্ভব না, এখানে মুলত সবাই অচেনা এবং লেখার ধরণ আর যোগাযোগের ধরণের উপরই সহব্লগারদের সাথে আন্তরিকতা গড়ে উঠে সেক্ষেত্রে কারো ব্লগে না যাওয়ার জন্যও অনেক সময় সচতুর আক্রমণের শিকার হতে পারে-
iv. নাস্তিক ব্লগারদের প্রতি আতংক: নাস্তিকদের ব্লগে গেলে নিজের ধর্মবিশ্বাস নষ্ট হতে পারে এই আতঙ্কেও অনেকেই নাস্তিকদের এড়িয়ে চলে ইত্যাদি।
ব্লগের ব্যাপারে সিনিয়র সহব্লগারগণ আরো অনেক কিছু বলতে পারবেন। আমি শুধু আমার পর্যবেক্ষণটুকু তুলে ধরলাম।
এছাড়াও আরও রকমারী ভীতি/আতঙ্ক যেমন:
ইদুর ভীতি , সাপাতঙ্ক
ইত্যাদি আরো অনেক কিছুই রয়েছে যা এই স্বল্প পরিসরে আলোচনা করলে পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটতে পারে।
Claustrophobia
Acrophobia
Hydrophobia
চিকিৎসাঃ
প্রধান চিকিৎসা হচ্ছে মনোচিকিৎসা (psychotherapy) আর আচরণ পরিবর্তনকারী (behavior therapy)। অনেকসময় বিষন্নতা (depression) রোগের সঙ্গে এই আতঙ্কিত হওয়ার রোগের সম্পর্ক দেখা যায়। এক্ষেত্রে এন্টি ডিপ্রেসিভ ঔষধ কাজে লাগতে পারে।
সবাই ভালো থাকুন।
শুভকামনা।।
(পূর্ব প্রকাশিত)
No comments:
Post a Comment