বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বায়তুল মোকাররম এর মসজিদে নামায পড়েছিলাম। পরবর্তীতে বছর দুয়েক আগে একবার পড়া হয়েছিল।
বাচ্চারা একটু বড় হওয়ার পর থেকে গত দুই তিন বছর ধরে ঈদের নামাযে অংশ নিতে বাচ্চাদের নিয়ে মসজিদে যাই।
এবার ঈদের প্রথম জামাত ধরার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সময় ভুল শোনার কারণে নামাজ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট পরে যেয়ে মসজিদে পৌঁছালাম। যার কারণে দ্বিতীয় জামাতে অংশ নিতে
পারলাম ।
এবার দ্বিতীয় সারিতেই জায়গা পেলাম । কেননা অন্যান্যবার একেবারে শেষের দিকের সারিতে দাড়াতে হতো । শুনেছি প্রথম দিকের কাতারে নাকি সওয়াব বেশি। অবশ্য নিশ্চিত না।
নামায শুরু হতে আরো কিছু সময় বাকী থাকাতে চারপাশে একটু তাকালাম ।
একজন নারী নামায পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁকে নিরস্ত করলেন বোরকা পড়া মুখে মেকাপ, ঠোটে লিপস্টিক চর্চিত এক নারী। তার ভাষ্য হচ্ছে ঈদের নামাযের আগে আর কোন নামায পড়ার নিয়ম নেই, যেমন নিয়ম নেই জুম্মার নামাযের আগে আর কোন নামায পড়ার (আমি জানি না আসল নিয়ম)।
আমার পাশের আরেক নারী সম্ভবত ২০/২২ এর বেশি হবে না বয়স, তিনি উনার স্মার্ট ফোনে এক পুরুষের গলা কাটা ফটোতে একের পর এক পোশাক (স্যুট, টাই) চড়িয়ে দেখছেন কোনটা মানায় বেশি। একটা ছবি সেট করলে খেয়াল করলাম হাতদুটো কোন বিদেশীর হওয়াতে তা একেবারেই সাদা হাত আর উনার পুরুষটির চেহারার সাথে সেই সাদা হাত একেবারেই বেমানান তা তিনি হয়তো খেয়াল করেন নি। নিজেকে মনে মনে তিরস্কার করলাম এসবে মন দেয়ার জন্যে। এর পর তিনি মোবাইলে গেম খেলা শুরু কররেন, শেষ পর্যন্ত তাকে থামাতে অনুরোধ করলাম তার গেমসের সাউন্ডে কমাতে এবং এতে বেশ কাজ হলো ।
দুই কিশোরী চরম আলাপ জুড়ে দিয়েছে, তাদেরকে আশা পাশ থেকে বারবার বলেও তেমন করে থামানো যাচ্ছে না । একটু থামলে পরে আবার শুরু করে দেয় গল্প।
বয়স্ক একজন নারী হতে পারে ষাট/পয়ষট্টি হবে। যৌবনে তিনি যে যথেষ্ট সুন্দরী ছিলেন তা তাঁকে দেখেই বোঝা যায়। একটানা বসে থাকতে না পেরে পুবদিকে পা ছড়িয়ে বসছেন। মায়াই লাগছিল উনার জন্যে। কেননা নামাযের অপেক্ষায় লম্বা সময় বসে থাকতে থাকতে আমারই পা ধরে যাচ্ছিল । আমার বাচ্চা মানুষ কন্যাটি যথেষ্ট ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করছিল।
সামনের সেলফে অনেক কোরআন শরীফের পাশাপাশি তাফসির শোভা পাচ্ছিল । আর একটা "পবিত্র বাইবেল" চোখে পড়লো ।
ইমাম সাহেব জানালেন আজ ফজরের নামাযের সময় দুই কাতারও পরিপূর্ণ হয়নি। কিন্তু ঈদের নামাযের চেয়ে ফজরের নামায পড়াটা জরুরী কেননা তা "ফরজ"। যেহেতু ঈদের নামায ওয়াজিব তাই যারা ফজরের নামায পড়েন নি তারা লোকলজ্জার কথা না ভেবে ঈদের নামাযের আগে ফজরের নামায যেন পড়ে নেন। কেননা মূল কাজ না করলে অতিরিক্ত কাজের মূল্য থাকে না । সত্যি বলতে কি আজ আমার নিজেরও ফজরের নামায মিস হয়েছে এবং সকাল বেলা কাজ্বাও পড়া হয় নি। তাই মনে মনে ইমাম সাহেবকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফজরের নামায কাজ্বা পড়ে নিলাম ।
অনেকেরই মোবাইল ফোন বেজে উঠছে।
নামায শুরুর আগে ইমাম সাহেব প্রতিবারই নামাযের নিয়ম বলে দেন তারপরও অনেকেই চারবার "আল্লাহু আকবার" পড়তে ভুল করেন। ভুল করেন প্রথম আর দ্বিতীয়বার রুকুতে যেতে। উল্লেখ্য আমি নিজেই প্রথম দুইবছর ভুল করেছি। তবে এবার আর ভুল হয়নি।
নামাযের অর্ধেক সময়ে পেছন থেকে ছোট্ট শিশুর কান্না ভেসে আসতে লাগলো এবং একেবারে শেষের দিকে শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে কাশতে শুরু করলো । নামায শেষে দেখলাম আমার মতো সবাই দেখতে চাইছে শিশুটিকে । খুব অবাক হয়ে খেয়াল করলাম রোজার ঈদে যেই শিশুটিকে আমি বেশ কিছুক্ষণ কোলে নিয়েছিলাম সেই শিশুটিই । বয়স ছয়/সাতমাস হবে। আমি জানি না এই বয়সী বাচ্চাদের মায়ের মসজিদে নামায পড়তে আসা জরুরী কী না যেখানে নামাযের সময় শিশুটিকে দেখার কেউ থাকে না ।
নামায পড়ে প্রতিবারই ভয়ে থাকি বাইরে বেরিয়ে হয়তো জুতা পাবো না। কিন্তু প্রতিবারই জুতা বহাল তবিয়তেই থাকে । তবে যে জুতা চোরের কথা শুনি ?
বাইরে দু'জন খাদেম বড় সাইজের ওড়না বা গামছা জাতীয় কাপড় মেলে ধরেছেন যে যা পাচ্ছে টাকা/পয়সা দান করে যাচ্ছে।
মসজিদ থেকে বেরিয়ে এবার বাসামুখি রওনা দিলাম ।
বাচ্চারা একটু বড় হওয়ার পর থেকে গত দুই তিন বছর ধরে ঈদের নামাযে অংশ নিতে বাচ্চাদের নিয়ে মসজিদে যাই।
এবার ঈদের প্রথম জামাত ধরার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সময় ভুল শোনার কারণে নামাজ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট পরে যেয়ে মসজিদে পৌঁছালাম। যার কারণে দ্বিতীয় জামাতে অংশ নিতে
পারলাম ।
এবার দ্বিতীয় সারিতেই জায়গা পেলাম । কেননা অন্যান্যবার একেবারে শেষের দিকের সারিতে দাড়াতে হতো । শুনেছি প্রথম দিকের কাতারে নাকি সওয়াব বেশি। অবশ্য নিশ্চিত না।
নামায শুরু হতে আরো কিছু সময় বাকী থাকাতে চারপাশে একটু তাকালাম ।
একজন নারী নামায পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁকে নিরস্ত করলেন বোরকা পড়া মুখে মেকাপ, ঠোটে লিপস্টিক চর্চিত এক নারী। তার ভাষ্য হচ্ছে ঈদের নামাযের আগে আর কোন নামায পড়ার নিয়ম নেই, যেমন নিয়ম নেই জুম্মার নামাযের আগে আর কোন নামায পড়ার (আমি জানি না আসল নিয়ম)।
আমার পাশের আরেক নারী সম্ভবত ২০/২২ এর বেশি হবে না বয়স, তিনি উনার স্মার্ট ফোনে এক পুরুষের গলা কাটা ফটোতে একের পর এক পোশাক (স্যুট, টাই) চড়িয়ে দেখছেন কোনটা মানায় বেশি। একটা ছবি সেট করলে খেয়াল করলাম হাতদুটো কোন বিদেশীর হওয়াতে তা একেবারেই সাদা হাত আর উনার পুরুষটির চেহারার সাথে সেই সাদা হাত একেবারেই বেমানান তা তিনি হয়তো খেয়াল করেন নি। নিজেকে মনে মনে তিরস্কার করলাম এসবে মন দেয়ার জন্যে। এর পর তিনি মোবাইলে গেম খেলা শুরু কররেন, শেষ পর্যন্ত তাকে থামাতে অনুরোধ করলাম তার গেমসের সাউন্ডে কমাতে এবং এতে বেশ কাজ হলো ।
দুই কিশোরী চরম আলাপ জুড়ে দিয়েছে, তাদেরকে আশা পাশ থেকে বারবার বলেও তেমন করে থামানো যাচ্ছে না । একটু থামলে পরে আবার শুরু করে দেয় গল্প।
বয়স্ক একজন নারী হতে পারে ষাট/পয়ষট্টি হবে। যৌবনে তিনি যে যথেষ্ট সুন্দরী ছিলেন তা তাঁকে দেখেই বোঝা যায়। একটানা বসে থাকতে না পেরে পুবদিকে পা ছড়িয়ে বসছেন। মায়াই লাগছিল উনার জন্যে। কেননা নামাযের অপেক্ষায় লম্বা সময় বসে থাকতে থাকতে আমারই পা ধরে যাচ্ছিল । আমার বাচ্চা মানুষ কন্যাটি যথেষ্ট ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করছিল।
সামনের সেলফে অনেক কোরআন শরীফের পাশাপাশি তাফসির শোভা পাচ্ছিল । আর একটা "পবিত্র বাইবেল" চোখে পড়লো ।
ইমাম সাহেব জানালেন আজ ফজরের নামাযের সময় দুই কাতারও পরিপূর্ণ হয়নি। কিন্তু ঈদের নামাযের চেয়ে ফজরের নামায পড়াটা জরুরী কেননা তা "ফরজ"। যেহেতু ঈদের নামায ওয়াজিব তাই যারা ফজরের নামায পড়েন নি তারা লোকলজ্জার কথা না ভেবে ঈদের নামাযের আগে ফজরের নামায যেন পড়ে নেন। কেননা মূল কাজ না করলে অতিরিক্ত কাজের মূল্য থাকে না । সত্যি বলতে কি আজ আমার নিজেরও ফজরের নামায মিস হয়েছে এবং সকাল বেলা কাজ্বাও পড়া হয় নি। তাই মনে মনে ইমাম সাহেবকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফজরের নামায কাজ্বা পড়ে নিলাম ।
অনেকেরই মোবাইল ফোন বেজে উঠছে।
নামায শুরুর আগে ইমাম সাহেব প্রতিবারই নামাযের নিয়ম বলে দেন তারপরও অনেকেই চারবার "আল্লাহু আকবার" পড়তে ভুল করেন। ভুল করেন প্রথম আর দ্বিতীয়বার রুকুতে যেতে। উল্লেখ্য আমি নিজেই প্রথম দুইবছর ভুল করেছি। তবে এবার আর ভুল হয়নি।
নামাযের অর্ধেক সময়ে পেছন থেকে ছোট্ট শিশুর কান্না ভেসে আসতে লাগলো এবং একেবারে শেষের দিকে শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে কাশতে শুরু করলো । নামায শেষে দেখলাম আমার মতো সবাই দেখতে চাইছে শিশুটিকে । খুব অবাক হয়ে খেয়াল করলাম রোজার ঈদে যেই শিশুটিকে আমি বেশ কিছুক্ষণ কোলে নিয়েছিলাম সেই শিশুটিই । বয়স ছয়/সাতমাস হবে। আমি জানি না এই বয়সী বাচ্চাদের মায়ের মসজিদে নামায পড়তে আসা জরুরী কী না যেখানে নামাযের সময় শিশুটিকে দেখার কেউ থাকে না ।
নামায পড়ে প্রতিবারই ভয়ে থাকি বাইরে বেরিয়ে হয়তো জুতা পাবো না। কিন্তু প্রতিবারই জুতা বহাল তবিয়তেই থাকে । তবে যে জুতা চোরের কথা শুনি ?
বাইরে দু'জন খাদেম বড় সাইজের ওড়না বা গামছা জাতীয় কাপড় মেলে ধরেছেন যে যা পাচ্ছে টাকা/পয়সা দান করে যাচ্ছে।
মসজিদ থেকে বেরিয়ে এবার বাসামুখি রওনা দিলাম ।
No comments:
Post a Comment